তুরস্কের নির্বাচনে এই ফলাফল বিরোধী দলের জন্য একটি বড় ব্যর্থতা। এই ফলাফলগুলি তুর্কি জনগণের সমাজতাত্ত্বিক গঠনের সঙ্গে একেবারেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। কারণ, তুরস্কে মাত্র ৩৫ ভাগ মানুষ ধার্মিক, রক্ষণশীল ও ডানপন্থী। বাকি ৬৫ শতাংশ মানুষ ধর্মনিরপেক্ষ ও কুর্দি।
তুরস্কের রাজনৈতিক বিশ্লেষক চেঙ্গিজ টোমার আলজাজিরাকে এসব কথা বলেন।
আধুনিক তুরস্কের ১০০ বছরের ইতিহাসে এটি অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ নির্বাচন। দেশটিতে ২০ বছর ধরে ক্ষমতায় আছেন রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ান। কিন্তু এবারই তিনি সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলেন। কারণ, তার বিরুদ্ধে বিগত দিনে নির্বাচন করা সব বিরোধী দল একাট্টা হয়ে মাঠে নেমেছিল। এমনকি পশ্চিমা মিডিয়ার বিভিন্ন জরিপেও দেখানো হয়, এবারের নির্বাচনে এরদোগান হেরে যাবেন।
নির্বাচনে এরদোগান সবচেয়ে বেশি প্রতিকূলতার মুখোমুখি হন মুদ্রাস্ফীতি ও ভূমিকম্প নিয়ে। তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে গত ৬ ফেব্রুয়ারি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়। ভয়াবহ এই ভূমিকম্পের তিন মাস পর দেশটিতে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন হয়।
ন্যাটোর সদস্যদেশ তুরস্ক। সাড়ে আট কোটি মানুষের বসবাস দেশটিতে। তুরস্কের অর্থনীতি সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। লিরার ব্যাপক দরপতন ঘটেছে।
পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমগুলো বারবার বলেছে, এরদোয়ানের সরকার ক্রমবর্ধমানভাবে কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠছে।
কোনো প্রার্থী যদি ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেতে ব্যর্থ হন, তাহলে নির্বাচন দ্বিতীয় পর্বে গড়াবে। সে ক্ষেত্রে ২৮ মে দ্বিতীয় দফার ভোট হবে।
তুরস্কের সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কোনও প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পেলে দ্বিতীয় রাউন্ডে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেক্ষেত্রে আগামী ২৮ মে শীর্ষ দুই প্রার্থীকে নিয়ে হবে রানঅফ ভোট।
রোববারের ভোটে কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পেলে শীর্ষ দুই প্রার্থীকে নিয়ে আগামী ২৮ মে হবে রান-অফ ভোট।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সজানায়, প্রেসিডেন্টের পদের লড়াইয়ে নামা চার প্রার্থীর মধ্যে মুহররম ইনসে তিন দিন আগে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন;তবে তার আগেই ব্যালট ছাপা শেষ হয়ে যাওয়ায় তার নাম বাদ দেওয়া সম্ভব হয়নি।
শনিবার প্রচারের শেষ পর্যায়ে কিলিসদারোগলু আধুনিক সেক্যুলার তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা কামাল আতাতুর্কের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
আর ৬৯ বছর বয়সী এরদোয়ান প্রচার শেষ করেন ইস্তাম্বুলের হায়া সোফিয়ায় মাগরিবের নামাজ পড়ে।
তুরস্কের নির্বাচনের দিকে মুসলিম বিশ্ব তাকিয়ে আছে,নামাজ শেষে উপস্থিত মুসল্লীদের উদ্দেশ্যে একে সমাবেশে এ নেতা এমনটা বলেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে।
এ তিনজনের বাইরে ব্যালটে থাকা অন্য নামটি উগ্র-জাতীয়তাবাদী সিনান ওগানের। কিন্তু দ্বিতীয় দফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তার সমর্থকদের ভোট হবে দুইপ্রেসিডেন্ট প্রার্থীর প্রধান নিয়ামক শক্তি।
সেই ক্ষেত্রে এসব ভোট এরদোগানের পক্ষে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ,সিনান ওগানের দল একসময় একে পার্টির জোটসঙ্গী ছিল, আদর্শিক দিক দিয়েও তাদের পথ কাছাকাছি।
awesome)