চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ১ম বর্ষ (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষা আগামী মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে। এবারের ভর্তি পরীক্ষায় প্রতি আসনের বিপরীতে লড়বেন ৪১ জন শিক্ষার্থী। চারটি ইউনিট ও দুইটি উপ-ইউনিটে চার হাজার ৯২৬টি আসনের জন্য মোট আবেদন পড়েছে দুই লাখ ৫৬ জনের। ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পুরো বিশ্ববিদ্যালয়কে ঢেকে ফেলা হচ্ছে নিরাপত্তার চাদরে। পাশাপাশি পুলিশের পক্ষ থেকে গোটা ক্যাম্পাসকে আনা হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারির আওতায়। সন্দেহভাজন বিভিন্ন সংগঠনগুলোর ওপর রাখা হচ্ছে বিশেষ নজরদারি। সংঘর্ষ, র্যাগিংসহ অপ্রীতিকর যে কোনো পরিস্থিতি এড়াতে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোখা গতিপথ পরিবর্তন করায় আমরা ইউনিট প্রধানদের সঙ্গে কথা বলে ভর্তি পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পরীক্ষা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্যবিধির বিষয় মাথায় রেখে ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীর সংখ্যা বিবেচনায় এবার প্রতিটি ইউনিটের পরীক্ষা তিনটি ইউনিটের পরীক্ষা দুই শিফটে অনুষ্ঠিত হবে। আইসিটি সেলের তথ্য মতে, ‘এ’ ইউনিটে এক হাজার ২১৫টি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছেন ৭৪ হাজার ৬৫৯ জন শিক্ষার্থী। এই ইউনিটে প্রতি আসনের বিপরীতে ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬২ জন। ‘বি’ ইউনিটে এক হাজার ২২১টি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছেন ৫২ হাজার ৯৯৫ জন শিক্ষার্থী। প্রতি আসনের বিপরীতে ভর্তির জন্য লড়বে ৪৪ জন। ‘সি’ ইউনিটে ৬৪০টি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছেন ১৯ হাজার ৯৯৯ জন শিক্ষার্থী। এই ইউনিটে প্রতি আসনে ভর্তির জন্য লড়বে ৩১ জন। ‘ডি’ ইউনিটে ৯৫৮টি আসনের বিপরীতে ৪৯ হাজার ১৭৮ জন আবেদন করেছেন। সম্মিলিত এই ইউনিটে প্রতি আসনের বিপরীতে লড়বেন ৫১ জন। দুইটি উপ-ইউনিটের মধ্যে বি-১ ইউনিটে ১২৫টি আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে এক হাজার ৩৮২ টি। এই উপ ইউনিটে প্রতি আসনের বিপরীতে ভর্তির জন্য লড়বেন ১১ জন। আর ডি-১ উপ ইউনিটে ৩০টি আসনের বিপরীতে এক হাজার ৮৪৩ জন প্রার্থী আবেদন করেছেন। এই উপ ইউনিটে আসন প্রতি লড়বে ৬২ জন। পরীক্ষা পদ্ধতি: ভর্তি পরীক্ষা বরাবরের মতোই ১২০ নম্বরে হবে। এর মধ্যে ১০০ নম্বর লিখিত পরীক্ষা (বহুনির্বাচনী) ও বাকি ২০ নম্বর এসএসসি ও এইচএসসি জিপিএ থেকে যুক্ত হবে। বহুনির্বাচনী পদ্ধতির এই ভর্তি পরীক্ষায় প্রতি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা যাবে। পরীক্ষায় ন্যূনতম পাস নম্বর হবে ৪০। তবে দ্বিতীয়বার আবেদনকারীদের মোট নম্বর থেকে পাঁচ নম্বর কর্তন করা হবে। পরীক্ষার সময়সূচি: ১৬ ও ১৭ মে বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘এ’ ইউনিট, ১৮ ও ১৯ মে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিট, ২০ ও ২১ মে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিট এবং ২২ ও ২৩ মে সমাজবিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া ২৪ মে উপ-ইউনিট বি-১ ও ২৫ মে ডি-১ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা দুই (সকাল-বিকেল) শিফটে অনুষ্ঠিত হবে। সকালের শিফটের পরীক্ষার্থীরা পৌনে ১০টায় কেন্দ্রে প্রবেশ করবেন। ওএমআর ফরম বিতরণ করা হবে সোয়া ১০টায়। প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হবে বেলা ১১টায়। পরীক্ষা শেষ হবে দুপুর ১২টায়। অন্যদিকে দুপুরের শিফটের পরীক্ষার্থীরা সোয়া ২টায় কেন্দ্রে প্রবেশ করবেন। ওএমআর ফরম বিতরণ করা হবে পৌনে ৩টায়। প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হবে বেলা সাড়ে ৩টায়। পরীক্ষা শেষ হবে বেলা সাড়ে ৪টায়। বিশেষ সাঁটল ট্রেন: ভর্তি পরীক্ষার দিনগুলোতে পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে বিশেষ সাঁটল ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আগামী ১৬, ১৭, ১৮, ১৯, ২০,২১, ২২, ২৩, ২৪ ও ২৫ মে এই বিশেষ সাঁটল ট্রেন সার্ভিস চলবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নুরুল আজিম সিকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তায় বিপুলসংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রক্টরিয়াল বডি সতর্ক অবস্থানে থাকবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষার সময় শহর থেকে ক্যাম্পাসে আসার রাস্তা যানজট মুক্ত রাখা হবে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সাঁটল ট্রেন যথারীতি চলবে।’ awesome)
Check Also
আটকে গেছে বিদেশি এয়ারলাইনসগুলোর ২১ কোটি ৪১ লাখ ডলার
বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করা বিদেশি এয়ারলাইনসগুলোর ২১ কোটি ৪১ লাখ ডলার অর্থ আটকা পড়েছে। বাংলাদেশি …