ইংল্যান্ডের এক বৃদ্ধার জীবনটাই বলা চলে বদলে গেল এক লটারি জিতে। মাত্র ২৫ পাউন্ড বা ৩ হাজার ৩০০ টাকার একটি টিকিট কিনেছিলেন জুন স্মিথ নামের ৭৪ বছরের এক নারী। আর এতেই তিনি জিতলেন কর্নওয়ালের ছয় কামরার তিন তলা এক বাড়ি। যার দাম ৪৫ লাখ পাউন্ড বা ৬০ কোটি টাকার বেশি।ইংল্যান্ডের ওমেইজ কোম্পানি অবশ্য একে লটারি নয় পুরস্কার হিসেবেই পরিচয় করিয়ে দেয়। যার নাম ওমেইজ মিলিয়ন পাউন্ড হাউস ড্র।এসেক্সে বাস করা জুন এই বাড়ির চাবির পাশাপাশি পেয়েছেন ১ লাখ পাউন্ড বা প্রায় ১ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। তিন সন্তানের মা জুন ওমেইজের সদস্যদের সঙ্গে যখন কথা বলেন তখন তাঁর চোখে আনন্দের জল। তিনি জানান, শেষবার যখন জায়গাটিতে আসেন তখন একটি ক্যারাভানে ছিলেন। তিনি বলেন, তাঁর মৃত স্বামী রন, যিনি ছিলেন একজন স্থপতি, অনেক খুশি হতেন বেঁচে থাকলে এই লটারি জেতায়। এমন একটি বাড়ি জিতে গেছেন এটা বিশ্বাস করতেও কষ্ট হচ্ছিল জেনের। জুন স্মিথ ইচ্ছা হলে, এ বাড়িতে বসবাস করতে পারবেন। কিংবা মন চাইলে ভাড়া কিংবা বিক্রিও করে ফেলতে পারবেন। স্থানীয় এস্টেট এজেন্টদের অনুমান বেশি সময়ের জন্য কাউকে ভাড়া দিলে বাড়িটি থেকে মাসিক ৫ থেকে ৭ হাজার পাউন্ড পাবেন। আর টুরিস্ট মৌসুমে ছুটি কাটানোর জন্য ভাড়া দিলে সপ্তাহে ১৪ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত পেতে পারেন।জুন স্বামী, সন্তান ও নাতি–নাতনিদের সঙ্গে শেষবার কর্নওয়ালে ছুটি কাটাতে এসে থাকেন একটি ক্যারাভানে। একসঙ্গে গাড়ি ও থাকার কামরা হিসেবে কাজ করে এই ক্যারাভান। তিনি জানান গত বছর স্বামীকে হারান তিনি। তাঁদের ৪৩ বছরের সংসারের ইতি টেনে ৭৪ বছর বয়সে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান রন। গত ১৭ বছর ধরে জুন দুই বেডরুমের একটি কামরায় থাকেন পরিবারসহ। অবসর নেওয়ার আগ পর্যন্ত একজন হিসাবরক্ষক হিসেবে কাজ করেন জুন। জুন স্মিথ বলেন, ‘টিভির সামনে বসে শুক্রবারের সাধারণ একটি রাত কাটাচ্ছিলাম। পরমুহূর্তে আমি জানলাম আমি একটি ম্যানসন জিতে গেছি। বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। প্রথম যেটা করলাম বাচ্চাদের ফোন দিলাম…’জুন জানান বাড়িটা আসলেই দুর্দান্ত। চারপাশের দৃশ্যও চোখ জুড়ানো। এটার মধ্যে এমনকি একটি ইয়োগা স্টুডিও আছে।‘আমার ছয়টি চমৎকার নাতি–নাতনি আছে। সবার থাকার মতো কামরার কোনো অভাব হবে না। গ্রীষ্মের সেরা ছুটিটা কাটাতে যাচ্ছি আমরা।’ বলেন উৎফুল্ল জুন। জুন স্মিথের তিন ছেলে–মেয়ে, ক্যাথেরিন, ওয়েসলি এবং রোরি। ক্যাথেরিন এবং রোরি এস্ট এনজিলায় থাকেন, প্রত্যেকের দুটি করে সন্তান আছে। ওয়েসলি স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে থাকে অস্ট্রেলিয়ার গোল্ড কোস্টে। এখান থেকে আশপাশের নদী ও চারপাশের কর্নিশ গ্রামগুলোর দৃশ্য উপভোগের পাশাপাশি ফওয়ের দৃষ্টিনন্দন সব স্থাপত্য দেখা যায়। বাড়িটির নকশা করেন স্থপতি হ্যারিসন সাটন।এবার বাড়িটির একটু বর্ণনা দেওয়া যাক। এনট্রান্স হলে আলো–বাতাস চলাচলের চমৎকার ব্যবস্থা আছে। পাশেই আছে একটি অফিস কামরা, যেটার দু–পাশে নিচ থেকে ছাদ পর্যন্ত জানালা। মূল বসবার কামরাটায় কাঠের একটা ফায়ার প্লেস আছে। আরামদায়ক কামরাটার অন্য পাশে আছে ৮৫ ইঞ্চির একটি টিভি। কিচেনটা অনেক প্রশস্ত। নাশতার বা ব্রেকফাস্ট রুমের পাশে আছে একটি ঝুল বারান্দা। হলওয়ের অন্য পাশে আছে একটি ভাঁড়ার ঘর। এর পাশে আবার একটি ডাইনিং রুম। একটি সিঁড়ি আপনাকে নিয়ে যাবে দুই তলায়। সেখানে বড় একটি খোলা জায়গার পরে মূল শোবার কামরা।নিচ তলার শোবার কামরাটাতে যেতে পাড়বেন সিটিং রুমে। সামনের বারান্দাটাতেও যাওয়া যায় শোবার ঘর থেকে। সিটিং রুম বা বসার কামরা থেকে একটি সিঁড়ি চলে গেছে ওপর তালার অতিথিদের জন্য বরাদ্দ শোবার কামরায়। এদিকে বাড়ির বাগানের এক প্রান্তে আছে একটি ইয়োগা স্টুডিও। ওমেইজের প্রধান আন্তর্জাতিক কর্মকর্তা জেমস ওকস জানান, জুন তাঁর স্বপ্নের বাড়িতে উঠতে পারায় তাঁরা রোমাঞ্চিত।সূত্র: ডেইলি মেইল, মিরর amazing)