বেতাগীর উপকূল এলাকায় গুমোট আবহাওয়া, জনমনে ভীতি নেই

ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে বরগুনার বেতাগী উপজেলার উপকূলীয় এলাকাগুলোতে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে। তবে আজ শনিবার দুপুর পর্যন্ত আকাশ মেঘলা থাকলেও, ঝড়ের কোনো প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি। ভোর রাত থেকে বিষখালী নদীর পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে এ অঞ্চলে ৪ নম্বর হুঁশিয়ার সংকেত দেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রভাগ দেশের উপকূলবর্তী এলাকাগুলোতে আঘাত হানতে পারে। সরেজমিনে দেখা গেছে, ভ্যাপসা গরমে অস্তির হয়ে পড়েছে এই এলাকার মানুষ। তবে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব না থাকায় এখানকার জনজীবন স্বাভাবিক রয়েছে। সকাল থেকেই স্বাভাবিক দিনের মত পৌর শহরের দোকানপাট খুলতে দেখা গেছে। বাজারে লোকজনের ঘোরাফেরাও স্বাভাবিক রয়েছে। গুমোট আবহাওয়া মধ্যেও বিষখালী নদী দিয়ে শনিবার সকাল থেকে সব ধরনের নৌ-যান চলাচল, খেয়া ও ফেরি পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে। মোখার কোনো ভীতি নেই স্থানীয়দের মাঝে। তবে ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে বেতাগী উপজেলা প্রশাসন। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১১৪টি আশ্রয়কেন্দ্র। লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তবুও শনিবার দুপুর পর্যন্ত সাইক্লোন শেল্টারগুলোতে লোকজন আসতে শুরু করেনি। স্থানীয়রা বলছে, ঘূর্ণিঝড় মোখা নিয়ে তারা আতঙ্কিত। তবে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পুরোপুরি শুরু না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা সতর্ক অবস্থানে যেতে আগ্রহী নন। বেতাগী পৌর শহরের রিকশাচালক নুরুজ্জামান হাওলাদার জানান, সকাল থেকে আকাশে মেঘ জমে আছে। সেই সঙ্গে ভ্যাপসা গরমের তীব্রতাও বেড়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের বিপদ সংকেত বাড়লে আশ্রয়কেন্দ্র যাবেন তিনি। উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কৃষক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘শুনেছি ঘূর্ণিঝড় আসবে তাই ভ্যাপসা গরমের মধ্যেও পাকা ধান কাটতে নেমেছি। ঘূর্ণিঝড়ে জমির ধান নষ্ট হয়ে গেলে পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে!’ বেতাগী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইচ্ছা ইকবাল বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে বোরো ধানের ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই। এবার এ উপজেলায় ৩৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ৮০ শতাংশের বেশি ধান ইতিমধ্যে কাটা হয়েছে। আশা করছি, খুব দ্রুতই বাকি ধান কাটা সম্ভব হবে।’ বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, ‘দুর্যোগ মোকাবিলায় ইতিমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের ছুটি। প্রস্তুত রাখা হয়েছে উপজেলার ১১৪টি সাইক্লোন শেল্টার। আশ্রয়কেন্দ্রে বিশুদ্ধ পানি এবং শুকনো খাবার মজুত রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় খোলা হয়েছে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্টের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আনসার সদস্য, পুলিশসহ সকলকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ awesome)

About admin

Check Also

আটকে গেছে বিদেশি এয়ারলাইনসগুলোর ২১ কোটি ৪১ লাখ ডলার

বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করা বিদেশি এয়ারলাইনসগুলোর ২১ কোটি ৪১ লাখ ডলার অর্থ আটকা পড়েছে। বাংলাদেশি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *