বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব পড়েনি বরগুনার বেতাগীতে। বৃষ্টি কিংবা ঝোড়ো বাতাস নেই কোথাও। উল্টো প্রখর রোদের তাপে অতিষ্ঠ উপকূলবাসী। তবে ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যে ১১৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার বিষখালী নদী তীরবর্তী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে নদ-নদীতে তেমন জোয়ারের পানি বাড়েনি। স্বাভাবিকের মতো প্রবাহিত হচ্ছে জোয়ারে পানি। ফলে উপকূলবাসীদের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় মোখার আতঙ্ক নেই, স্বাভাবিক রয়েছে তাঁরা। বিষখালী নদী দিয়ে আজ সকাল থেকে সব ধরনের নৌযান চলাচল, খেয়া ও ফেরিও চলাচল করছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মধ্য এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এটি শুক্রবার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১০২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল। ১৪ এপ্রিল নাগাদ ঘূর্ণিঝড় মোখা বাংলাদেশের কক্সবাজার ও মিয়ানমারের উপকূল অতিক্রম করতে পারে। বেতাগী পৌরসভা এলাকার ভ্যানচালক মো. তোকাব হোসেন বলেন, ‘কয়দিন থেকেই শুনতেছি ঘূর্ণিঝড় হবে। বাস্তবে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। উল্টো প্রচণ্ড গরমের কারণে ভ্যান না চালিয়ে বিশ্রাম নিতেছি।’ মোকামিয়া এলাকার আলমগীর নামের এক জেলে বলেন, ‘বন্যার কথা শুনি কিন্তু বিষখালী নদী আগের মতোই রয়েছে। জোয়ারের পানিও বাড়ে নাই। সবকিছু স্বাভাবিক আছে। এখনো জেলেদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েনি। তবে তাঁরা সতর্ক রয়েছেন। আমরা এখনো নদীতে মাছ ধরতে যাচ্ছি।’ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে কৃষকদের সতর্কতামূলক পরামর্শ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইছা ইকবাল বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে বোরো ধানের ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই। এবার এ উপজেলায় ৩৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ৮০ শতাংশের বেশি ধান ইতিমধ্যে কাটা হয়েছে। আশা করছি খুব বাকি ধান কাটা সম্ভব হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এখানে সিপিপি, রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় পর্যাপ্ত খাবারও মজুত রাখা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিদের নিয়ে জরুরি সভা করে একটি কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে। amazing)