তীব্র দাবদাহে পুড়ছে রাজশাহী। গত কয়েক দিন ধরেই তাপমাত্রার পারদ ঊর্ধ্বমুখী। এতে নাভিশ্বাস উঠেছে মানুষের। ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে না গরমের কারণে।
এই গরমের মধ্যে আবার মাঝে মাঝেই বন্ধ হচ্ছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। ফলে অস্থির হয়ে উঠছে জনজীবন। আর রোদের কারণে রাস্তায় বের হলে গায়ে লাগছে আগুন ঝলসানো তাপ।
রাজশাহী আবহওয়া অফিসের তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পরদ রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সর্বনিম্ন ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বুধবার (১০ মে) সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পরদ উঠেছিল ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। গত মঙ্গলবার দুপুর ৩টায় রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত সোমবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ ছিল ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আর এই মৌসুমে গত ১৭ এপ্রিল রাজশাহীতে সর্বোচ্চ ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছিল আবহওয়া অফিস; যা ২০১৪ সালের ২১ মে এর পর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
তীব্র গরমে কাজ করতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। একটু প্রশান্তি পেতে অনেকে ঘর ছেড়ে বাগানে গাছের নিচে আশ্রয় নিচ্ছেন। রিকশাচালকেরাও বসে জিরিয়ে নিচ্ছেন গাছতলায়। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া দুপুরে মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
তীব্র ভ্যাপসা গরম ও রোদ্র থেকে রক্ষা পেতে একটু বিশ্রামের আশায় নগরীর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের অভ্যান্তরে বসেছিলেন কয়েকজন রিকশাচালক। তারা বলেন, তাদের গ্রামের বাড়ি মোহনপুর উপজেলায়। সকালে রিকশা নিয়ে বের হয়েছেন। এই গরমে রিকশা চালানো অনেক কষ্টের। আর দুপুরে তো চামড়া পুড়ে যাওয়ার অবস্থা। তাই এখানে বিশ্রাম নিচ্ছেন।
‘সায়েন্স ডিরেক্ট’ নামক প্রকাশনায় মডেলিং ফিউচার ল্যান্ড ইউজ: ল্যান্ড কাভার চেঞ্জেস অ্যান্ড দেয়ার ইমপ্যাক্ট অন ল্যান্ড সারফেস টেম্পারেচারস ইন রাজশাহী, বাংলাদেশ’ শিরোনামে প্রকাশিত সাম্প্রপ্তিক এক গবেষণা বলছে, গত দুই দশকে রাজশাহীতে বৃক্ষগুল্ম আচ্ছাদিত ভূমি কমেছে ১৯ শতাংশ আর জলাশয় কমেছে ৪ শতাংশ হারে। সে কারণেই এ সময়ের মধ্যে এই অঞ্চলে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বেড়েছে ৯ দশমিক ৮৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা কার্বন নিঃসরণের শীর্ষে থাকা অঞ্চলগুলোর চেয়েও বেশি।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাজিব খান বলেন, গত দুই দিনের চেয়ে বৃহস্পতিবার তাপমাত্রার পারদ কিছুটা কম। তবে দুপুর ৩টার দিকে আর্দ্রতা ছিল ৪৭ শতাংশ। এ কারণে প্রচুর গরম অনূভব হচ্ছে। সঙ্গে ঘামও হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সামনে আবহাওয়া কেমন হবে তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।
awesome)