১৯১৪ সালের ১ জানুয়ারি ভ্রমণের ইতিহাসে একটি বিশেষ দিন। যুক্তরাষ্ট্রে সেদিন বিশ্বের প্রথম অভ্যন্তরীণ যাত্রীবাহী বিমান পরিষেবার সূচনা হয়েছিল। দুই আসনের ছোট্ট একটি সি প্লেনে ফ্লোরিডার সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার বা ১৭ মাইল দূরে উপসাগরের ওপর দিয়ে টাম্পা পর্যন্ত এই পথটুকু পাড়ি দিতে সময় লেগেছিল ২৩ মিনিট। পাইলট ছিলেন টনি জানুস এবং যাত্রী ছিলেন সেন্ট পিটার্সবার্গের সাবেক মেয়র আব্রাম সি ফিল।বিমানে যাত্রী পরিবহনকে আন্তর্জাতিক রূপ দেওয়ার কৃতিত্ব ব্রিটিশদের। ১৯১৯ সালের ২৫ আগস্ট বিশ্বের প্রথম আন্তর্জাতিক নিয়মিত যাত্রীবাহী বিমানের যাত্রা শুরু হয়েছিল। আকাশপথে লন্ডন ও প্যারিসকে সংযুক্ত করেছিল এয়ারক্রাফট ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড ট্রাভেল নামক একটি ব্রিটিশ বিমান সংস্থা। এক ইঞ্জিনের এই বিমানে ছিল চারটি আসন। দুটি আসন যাত্রীদের জন্য এবং বাকি দুটি পাইলটদের জন্য। কিন্তু উদ্বোধনী ফ্লাইটে যাত্রী ছিলেন মাত্র একজন, লন্ডনের ‘ইভনিং স্ট্যান্ডার্ড’ সংবাদপত্রের সাংবাদিক জর্জ স্টিভেনসন-রিস। লন্ডন থেকে প্যারিসের উদ্দেশে সে উড়ান শুরু হয়েছিল সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে। ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিটের যাত্রাপথের ভাড়া বাবদ জর্জকে পরিশোধ করতে হয়েছিল ২১ পাউন্ড স্টার্লিং। সে সময় এই পরিমাণ অর্থ ছিল একজন কর্মজীবী মানুষের দেড় মাসের বেতনের সমান।সেই শুরু। আকাশভ্রমণে মানুষের আগ্রহকে সম্বল করে অচিরেই গড়ে ওঠে বেশ কিছু বাণিজ্যিক যাত্রীবাহী বিমান সংস্থা। নেদারল্যান্ডসের কে এল এম, অস্ট্রেলিয়ার কান্টাস, জার্মানির লুফথানসা এবং এয়ার ফ্রান্স আকাশে ভাগ বসায়। সাধারণের নাগালে না পৌঁছালেও বিমানভ্রমণ দ্রুততম সময়ে ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এক ইউরোপে ১৯২৯ সালে যেখানে বিমানে ভ্রমণকারী যাত্রীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৮০ হাজার, সেখানে মাত্র ১০ বছর পরে ১৯৩৯ তা গিয়ে পৌঁছায় ৮ লাখের ঘরে। একই সময় বিমানের যাত্রী যুক্তরাষ্ট্রে ২ লাখ থেকে ছাড়িয়ে যায় ২০ লাখে। এ সময়টুকুর মধ্যে যাত্রীদের আরাম-আয়েশের দিকে খেয়াল রেখে বিমানের প্রভূত উন্নতি সাধন করা হয়। গড়ে ওঠে সুবিন্যস্ত, সুসজ্জিত বিশাল সব বিমানবন্দর। প্রতিযোগিতামূলক ভাড়ার কারণে সাধারণ মানুষও আকাশপথে এমন অসাধারণ ভ্রমণে আগ্রহী হতে শুরু করে।আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে বিশ্বব্যাপী বিমানে ভ্রমণকারীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৪৫০ কোটি। পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা ৮০০ কোটির বেশি। সে হিসাবে বছরে আকাশে ওড়ে পৃথিবীর অর্ধেক মানুষ! Great)
Check Also
বাজেট কি বাস্তবসম্মত হলো
বিশ্ব অর্থনীতি একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। কোভিডের ধাক্কা এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে নিত্যপণ্যসহ প্রায় সব …