সেনাবাহিনীর সঙ্গে যেভাবে সম্পর্কের অবনতি হয় ইমরান খানের

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানকে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের (আইএইচসি) প্রাঙ্গণ থেকে মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে উত্তাল হয়েছে পাকিস্তান। এমনকি দেশটির সেনা স্থাপনাতেও হামলা হয়েছে।

গত সপ্তাহে সেনাবাহিনীর এক শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনেন ইমরান খান। যদিও এটিকে ভিত্তিহীন অভিযোগ বলে তাকে সতর্ক করে দেশটির সেনাবাহিনী।

লাহোরে সম্প্রতি এক জনসভায় ইমরান খান দাবি করেন, গত বছর তাকে হত্যাচেষ্টায় সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল ফয়সাল নাসির জড়িত ছিলেন।

সোমবার আইএসপিআর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইমরান খানের এ অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন, দুখ:জনক এবং অগ্রহণযোগ্য।

ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করা থেকে শুরু করে জেলে পাওয়া পর্যন্ত সবকিছুর পেছনে দেশটির সেনাবাহিনী জড়িত বলে জোর গুঞ্জন রয়েছে।

ইমরান খান যখন ২০১৮ সালে ভোটে জিতে ক্ষমতায় আসেন তখন সেনাবাহিনীর সঙ্গে তার মধুর সম্পর্ক ছিল।

অনেক বিশ্লেষকের ধারণা, সেনাবাহিনী সাহায্য নিয়েই তিনি সেবার বিজয়ী হন। কিন্তু চরম অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে একটা পর্যায়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে তার সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হয়।

গত কয়েক মাসের ঘটনায় বোঝা যায়, তাদের সম্পর্ক এখন কতটা বৈরি হয়ে উঠেছে।

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ইমরান খান হয়ে ওঠেন সেনাবাহিনীর সবচেয়ে কঠোর সমালোচক। আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ইমরান খানকে গ্রেফতার করা হলেও এর পেছনে অন্য কারণ রয়েছে বলে মনে করেন দেশটির রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সেনাকর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঢালাও মন্তব্য কারণেই সেনা মদদে ইমরান খানকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে মনে করেন অনেকে।

ইমরান খান ক্ষমতা ছাড়ার পর সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার সঙ্গে তার বাজে সম্পর্কের বিষয়টি সামনে আসে। সে সময় বলা হয়, সেনাবাহিনীর সঙ্গে মতবিরোধের কারণেই ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছে তাকে।

এছাড়া, পাকিস্তানের প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ করেছিলেন ইমরান খান। পরে তার ওই অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে প্রত্যাখ্যান করে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী গণসংযোগ পরিদফতর আইএসপিআর।

এর আগে, গত বছরে নভেম্বরে লংমার্চের সময় হামলার ঘটনায় সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধের হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছিলেন ইমরান খান।

মূলত ওই ঘটনার পর থেকেই নিজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের পাশাপাশি সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে বিভিন্ন সময় ঢালাও মন্তব্য করেন ইমরান। আর এসব কারণেই তাকে গ্রেফতার করা হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করেছেন দেশটির রাজনীতিবিদরা।

এদিকে পাকিস্তানের অবনতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা সংযম প্রদর্শন এবং আইনের শাসন বজায় রাখার ওপর জোর দিয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন এক বিবৃতিতে বলেছে, এরকম পরিস্থিতিতে সংযম প্রদর্শন এবং মাথা ঠাণ্ডা রাখা দরকার। পাকিস্তানের যেসব চ্যালেঞ্জ তা মোকাবেলা এবং দেশটি কোন পথে যাবে তা একমাত্র পাকিস্তানের জনগণই নির্ধারণ করতে পারে। সেটা করতে হবে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এবং আইনের শাসন বজায় রেখে।

amazing)

About admin

Check Also

একশ টাকার বিবাদে বন্ধুর হাতে বন্ধু খুন

চট্টগ্রামের পটিয়ায় একশ টাকার বিবাদে বন্ধু মারুফের হাতে মোহাম্মদ মঈনুদ্দিন (১৮) নামের অপর বন্ধু খুন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *