নেত্রকোনার বারহাট্টায় বখাটের দায়ের কোপে নিহত স্কুলছাত্রী মুক্তি রানী বর্মণের বড় বোন নিপা রানী বর্মণকে চাকরি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নেজারত শাখায় আউট সোর্সিংয়ে তাঁকে চাকরি দেওয়া হয়।আজ মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিপা রানী বর্মণের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। এ সময় মুক্তি রানীর বাবা-মা তাঁর সঙ্গে ছিলেন। নিপা রানী বর্মণ নেত্রকোনা সরকারি কলেজে পড়াশোনা করেন।জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ আজকের পত্রিকাকে জানান, মুক্তি রানীর ভাই-বোনেরা যেন তাদের ঠিকমতো পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারে, তারা যেন তাদের অসহায় না ভাবে, সেই মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেই মুক্তি রানী বর্মণের বড় বোনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। এতে পরিবারটি অর্থনৈতিকভাবে সাপোর্ট পাবে। এ ছাড়া মানসিকভাবে ওই পরিবারটিকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য প্রশাসন সব সময় সুনজর রাখবে।জেলা প্রশাসক বলেন, ‘মুক্তি রানী হত্যার ঘটনায় আমি ব্যক্তিগতভাবে খুবই মর্মাহত। এ ঘটনা আমার মনে কঠিন দাগ কেটে গেছে। যে চলে গেছে, তাঁকে তো আর ফেরানো যাবে না। তবে যারা আছেন তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টায় নিজ উদ্যোগে এই চাকরির ব্যবস্থা করেছি।’অঞ্জনা খান মজলিশ আরও বলেন, ‘প্রশাসনে চাকরির সঙ্গে মানবিকতার দায়িত্বও রয়েছে আমাদের। আমরা চাই নিহত মুক্তি রানী বর্মণের মতো আর যেন কাউকে এভাবে জীবন দিতে না হয়।’এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মামুন খন্দকার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) অনিমেষ সোম, বারহাট্টার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এসএম মাজহারুল ইসলাম, বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বারহাট্টা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি দীপক কুমার সাহা সেন্টু, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিতাংশু বিকাশ আচার্য প্রমুখ।প্রসঙ্গত, গত ২ মে নেত্রকোনার বারহাট্টায় স্কুল থেকে ফেরার পথে দশম শ্রেণির ছাত্রী মুক্তি রানী বর্মণকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে বখাটে কাওসার (১৯)। এ ঘটনায় দেশ জুড়ে প্রতিবাদ শুরু হয়। পরদিন বিকেলে কাওসারকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রাজনৈতিক, সামাজিক ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা মুক্তি রানীর পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন। সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আশরাফ আলী খান খসরু ইতিমধ্যে আগে মুক্তি রানীর পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তা করেছেন। সেই সঙ্গে তাঁর ভাই-বোনদের পড়ালেখার খরচ বহন করার কথা ঘোষণা দিয়েছেন। জেলা পরিষদ থেকেও নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।মুক্তি রানীরা ছয় বোন ও এক ভাই। অত্যন্ত দরিদ্র পরিবার হলেও ভাই-বোনেরা সবাই পড়াশোনা করছেন। তাদের বাকি পাঁচ বোন ও এক ভাই যেন নির্ভয়ে পড়াশোনা করতে পারে সেই পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন মুক্তি রানীর বাবা নিখিল বর্মণ।নিহত মুক্তি রানী স্থানীয় প্রেমনগর ছালিপুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। সেই সঙ্গে নারী প্রগতি সংঘের ইয়ুথ গ্রুপের সদস্য ছিল। সে বাল্যবিবাহ, ইভটিজিং প্রতিরোধে কাজ করছিল। awesome)
Check Also
কয়লা সংকটে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ
কয়লা সংকটে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেল পটুয়াখালীর পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের (বিসিপিসিএল) উৎপাদন। আজ সোমবার বেলা …