কারণ ছাড়াই বাড়ছে তেল ও চিনির দাম

বাজারে জিনিসপত্রের দাম লাগামহীনভাবেই বাড়ছে। সরবরাহে ঘাটতি নেই, বাড়তি চাহিদাও নেই, আন্তর্জাতিক বাজারেও দাম বাড়ার লক্ষণ নেই। কিন্তু আমাদের দেশের একশ্রেণির ব্যবসায়ী অনেকটা তাঁদের খেয়ালখুশিমতো নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে ভোক্তা, ক্রেতাদের পকেট কেটে চলেছেন নির্বিঘ্নে।আজকের পত্রিকায় ৪ মে ‘চিনিতে অরাজকতা, ভোজ্যতেলের দামও বাড়াতে তোড়জোড়’ এবং ৫ মে ‘চাপ দিয়ে বাড়ানো হলো ভোজ্যতেলের দাম’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।রাজধানীর খুচরা বাজারে ৩ মে পর্যন্ত প্রতি কেজি চিনি সর্বোচ্চ ১৪০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে ভোক্তাদের কাছে। আর বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৯৯ টাকা, যা আগে ছিল ১৮৭ টাকা, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ১৭৬ টাকা, যা আগে ছিল ১৬৭ টাকা এবং সুপার পাম ১৩৫ টাকা, যা আগে ছিল ১১৭ টাকা।আমাদের অভিজ্ঞতা বলে, নির্ধারিত দরে কখনোই খুচরা বাজারে পণ্য বিক্রি করা হয় না; বরং বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি দামে পণ্যসামগ্রী বিক্রি হয়। এই দাম বাড়ানোর জন্য কাউকে অভিযুক্ত করে শাস্তির আওতায় আনার কোনো ব্যবস্থা আমাদের দেশে না থাকায় বাজারে স্বেচ্ছাচারিতা স্থায়ী রূপ নিয়েছে। কয়েক মাস ধরে দেখা যাচ্ছে, প্রতি সপ্তাহ বা মাসে কোনো না কোনো পণ্য বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে গিয়ে ক্রেতাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়ও বাড়ছে লাগামহীনভাবে। বাস্তবতা হলো, বেশির ভাগ মানুষের আয় মোটেই বাড়েনি। ফলে জীবনযাত্রার মানের সঙ্গে আপস করে কায়-ক্লেশে জীবিকা নির্বাহ করতে হচ্ছে তাদের; বিশেষ করে নিম্ন আয়ের ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের।দেশের পাঁচটি কোম্পানি চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণ করে বলে অভিযোগ আছে। আর দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে কথাবার্তা উঠলে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা পরস্পরের ওপর দোষারোপ করে থাকেন। এভাবে একপক্ষ অপরপক্ষকে দোষারোপ করলেও এটি যে মূলত ব্যবসায়ীদের একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা, এতে কোনো সন্দেহ নেই। যে ব্যবসায়ীরা তাঁদের লাভ ছাড়া সাধারণ মানুষের কথা ভাবেন না, সেই ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সরকার দেখলেও ক্রেতাসাধারণের স্বার্থ দেখার কেউ নেই।চিনি গুরুত্বপূর্ণ নিত্যপণ্য না হলেও এর ওপর অনেকের জীবন-জীবিকা নির্ভর করে। চিনির দাম বাড়লে ক্ষতিগ্রস্ত হন মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী, ক্ষুদ্র ও ভাসমান চা-দোকানিরা।বাজার নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির তেমন কোনো ব্যবস্থা আমাদের চোখে পড়ে না। এ ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায় না। এ কারণে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ক্রেতাদের জিম্মি করে অধিক মুনাফা লুটে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। চিনি ও ভোজ্যতেলের বাজারের প্রকৃত অবস্থা যাচাইয়ে জাতীয় ভোক্তা- অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে বাজার তদারকি জোরদার করতে হবে। কেউ ইচ্ছা করে বাজারে সংকট তৈরি করলে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। মুনাফালোভীদের ছাড় দেওয়ার সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। Great)

About admin

Check Also

আটকে গেছে বিদেশি এয়ারলাইনসগুলোর ২১ কোটি ৪১ লাখ ডলার

বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করা বিদেশি এয়ারলাইনসগুলোর ২১ কোটি ৪১ লাখ ডলার অর্থ আটকা পড়েছে। বাংলাদেশি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *