প্রেমিকা নিয়ে বিরোধে যুবককে কুপিয়ে হত্যা, গ্রেফতার ৬

গাজীপুরে প্রেমিকাকে নিয়ে বিরোধের জেরে কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন এক যুবক। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কিশোর গ্যাং গ্রুপের ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. হাসিবুর রহমান টুটুল (২১), রিয়াদ হোসেন মুন্না (১৮), মো. শাকিল (১৯), মো. রাকিব (২২) ও অপর দুইজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার রেজওয়ান আহমেদ জানান, গত ২৭ এপ্রিল দুপুরে সদর থানাধীন দক্ষিণ ছায়াবীথির ফণিরটেক এলাকার নিরিবিলি মাঠের পূর্বপাশে ধানক্ষেতের কাছে সিয়াম (২০) নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের হাত, পা, গলা, মুখ কাপড় দিয়ে বাঁধা এবং মুখমণ্ডলসহ লাশের সারা শরীরে কাটা রক্তাক্ত জখম ছিল। নিহত সিয়াম শহরের ছোট দেওড়া এলাকার মো. সফিকুল ইসলামের ছেলে।

তিনি আরও জানান, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ডের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সরাসরি জড়িত এক কিশোরকে (১৬) সদর থানার দক্ষিণ ছায়াবীথি এলাকা থেকে ২৯ এপ্রিল গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ওই কিশোর জানায়- একটি মেয়ের সঙ্গে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী এবং হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত পলাতক আসামি মো. আরাফাতের (২০) দীর্ঘদিন যাবত প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ঘটনার পাঁচ দিন আগে মেয়েটির আত্মীয়ের বাড়ি সদর থানাধীন ছোট দেওড়া এলাকায় তার বান্ধবীদের সঙ্গে ঘুরতে গেলে নিহত সিয়ামের সঙ্গে পরিচয় হয়। তারা নিজেদের মধ্যে ফেসবুক আইডি বিনিময় করে এবং পরবর্তীতে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে চ্যাট চলতে থাকে।

অন্যদিকে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী প্রেমিক আরাফাত তার প্রেমিকার ফেসবুক মেসেঞ্জার আইডি তার মোবাইলে লগইন করে রাখে। এতে প্রেমিকা মেসেঞ্জার আইডি দ্বারা তাদের কথোপকথন বা চ্যাট করতো তার বিস্তারিত আরাফাতের নিজের মোবাইলে দেখতে পেত। এতে আসামি আরাফাতের চরম ক্ষোভ ও আক্রোশ জমতে থাকে এবং পরিকল্পনা করে সিয়ামকে মেরে ফেলার।

এ ঘটনার ধারাবাহিকতায় গত ২৬ এপ্রিল রাতে নিহত সিয়ামকে কৌশলে মেয়েটির মেসেঞ্জার আইডি থেকে আরাফাত নিজেই তার পরিচয় গোপন করে প্রেমিকা সেজে নিহত সিয়ামের সঙ্গে চ্যাট করে এবং ঘটনাস্থলে এসে তার সঙ্গে দেখা করতে বলে। সদ্য পরিচয় এবং নিজের ভালোলাগা থেকে নিহত সিয়াম দেখা করার জন্য নিদিষ্ট সময়ে উল্লিখিত ঘটনাস্থলে আসে।

এ সময় হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী পলাতক আরাফাতসহ ১০-১৫ জনের একটি গ্রুপ আরাফাতের নির্দেশে সিয়ামের হাত-পা বেঁধে এলোপাতাড়ি চাপাতি, সুইচ গিয়ার চাকু ও ছেন দিয়ে কুপিয়ে সিয়ামের মৃত্যু নিশ্চিত হলে যে যার মতো চলে যায়।

পরে পুলিশ ঘটনা তদন্ত করে প্রথমে অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরকে (১৬) গত ২৯ এপ্রিল সদর থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। সে আদালতে ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

পরবর্তীতে অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর (১৫), মো. হাসিবুর রহমান টুটুল (২১), রিয়াদ হোসেন মুন্নাকে (১৮) ৩০ এপ্রিল দক্ষিণ ছায়াবীথি এলাকা থেকে এবং মো. শাকিল (১৯) ও মো. রাকিবকে (২২) শহরের বাঙ্গালগাছ এলাকা থেকে রোববার গ্রেফতার করা হয়।

আর এ ঘটনাটি যাকে কেন্দ্র করে ঘটেছে সেই প্রেমিকা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছে।

amazing)

About admin

Check Also

যমুনা টেলিভিশনের প্রতিনিধির ওপর হামলা, যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে চার্জশিট

সুনামগঞ্জে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে অনিয়মের সংবাদ প্রকাশ করায় যমুনা টেলিভিশনের প্রতিবেদক আমিনুল ইসলামকে মারধরের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *