সারা রাত কাদেরের ফোনে মেসেজ, বিরক্ত হয়ে জানালেন শান্তিতে ঘুমাতে পারছেন না

ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতাদের এসএমএসে বিরক্ত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। রাতে মোবাইল সাইলেন্ট থাকে উল্লেখ করে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী কাদের জানান, সারা রাত যেসব মেসেজ আসে, সকালে ঘুম থেকে উঠে সেগুলো তিনি দেখেন। ওই সময় (সকালে) এত মেসেজ পড়তে পড়তে সময় ফুরিয়ে যায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, দয়া করে কেউ মেসেজ দেবেন না। ছাত্রলীগ নেতাদের সতর্কও করে দেন মন্ত্রী। গতকাল আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির ২২তম সম্মেলন উপলক্ষে প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

রাতে মোবাইল সাইলেন্ট করে ঘুমান বলে জানিয়ে কাদের বলেন, সকালে দেখি সারা রাত (কল)- বেশিরভাগ হল ছাত্রলীগের। এখানেও আছেন কেউ কেউ, আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিভিন্ন জায়গার। এসব জ্বালাতনগুলো ‘দয়া করে’ সকালে উঠে আমি আমার মেডিকেশন আছে, আমাকে বাইরে যেতে হয়, তখন আমার প্রস্তুতিটা লাগে। কিন্তু ওই সময় এত মেসেজ পড়তে পড়তে শেষ, সময় ফুরিয়ে যায়। দয়া করে আমাকে মেসেজ দেবেন না।

কোনও অতি উৎসাহী ভক্ত সুবিধা পাবেন না বলে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, কারও বাড়ি কোম্পানীগঞ্জ কিংবা নোয়াখালী হলে, আমার ওই সব প্রীতি নাই। আমি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তাই নেতাকর্মীদের একই চোখে দেখি। আমার এলাকাবাসী আমাকে নির্বাচিত করে সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু কারও প্রতি আমি বিশেষ দৃষ্টি দিতে পারি না, পারবো না। আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মী আমার জন্য সমান।

সম্মেলনকে কেন্দ্র করে কাউকে তার অতি উৎসাহী ভক্ত সাজতে নিষেধ করে তিনি বলেন, এই দলের নেতাকর্মীদের মনে খবর আমাদের সভাপতি শেখ হাসিনার চেয়ে বেশি জানেন না। তিনি কাউন্সিলরদের মনের খবর ও জীবনের খবর, এমনকি তারা কীভাবে চলছে, কে অসুস্থ, কার আর্থিক সচ্ছলতা নেই, সব খবর রাখেন।আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নির্বাচনে সভাপতি শেখ হাসিনার বিকল্প নেই উল্লেখ করে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, একজন কাউন্সিলরও খুঁজে পাওয়া যাবে না যে, আমাদের নেত্রীকে পুনর্বার চাইবেন না। তার জন্য আমরা আজকে এসেছি।

কখনোই নিজে প্রার্থিতার মধ্যে ছিলেন না বলে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখানে আমাদের মধ্য থেকে আমি এসব প্রার্থিতার মধ্যে কখনও ছিলাম না। তাই আমার অতি উৎসাহী ভক্ত হয়ে নিজেদের বিভেদ সৃষ্টি করবেন না। আমি ভালো আছি, নেত্রী যে দায়িত্ব দেবেন, যেখানে রাখবেন, আমি সেটাই করবো।ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কেন দলীয় সভাপতির ধানমন্ডির কার্যালয়ে ঘুর ঘুর করে প্রশ্ন তুলে কাদের বলেন, ‘তাদের জন্য আমাদের নেত্রী একটি সুসজ্জিত কার্যালয় তৈরি করে দিয়েছেন। সেটা হলো আমাদের ২৩ নম্বর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ। তারা এখানে ঘুরে কেন? ছাত্রলীগ অফিসে গেলে, ওই অফিসে যাবে। তদবির করলে ওই অফিসে করবে। এখানে তো তাদের আসার কথা না।

আওয়ামী লীগের সম্মেলন উপলক্ষে সাজসজ্জা ও বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা নিষেধ করেছেন বলে জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, তারপরও মফস্বলে গিয়ে হায়রে বিলবোর্ড, যেখানেই যাই বিলবোর্ড। সামনে দেখি একরকম, বিলবোর্ডে দেখি আরেক রকম। চিনিই না। আমার ছবিও আমার চিনতে কষ্ট হয়। কোথায় এলাম? এখানে কী দেখলাম। বিলবোর্ডের ছড়াছড়ি যেভাবে হচ্ছে, এসব আমরা করবো না।

উপ-কমিটির সদস্যদের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনি যদি অন্য কোনও শাখার কর্মকর্তার পদে থাকেন, তাহলে উপ-কমিটিতে থাকতে পারবেন না। যদি জেলা, উপজেলা, থানা কমিটির কর্মকর্তা হন, তাহলেও সম্ভব না। কে কোথায় আছেন, সেটা খোঁজ নিলে বের হয়ে আসবে।জেলার সহযোগী সংগঠনের কর্মকর্তা উপ-কমিটিতে থাকতে পারবে না বলে জানিয়ে কাদের বলেন, আমাদের অনেক কর্মী বিনা পরিচয়ে, বিনা পদে এখানে ঘুরে বেড়ায়। তাদের আমরা কোনও পদ দিতে পারি না। কিন্তু কিছু কিছু মানুষ একাধিক পদে রয়েছে।
প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।

About admin

Check Also

মাটির নিচের ‘বিমান ঘাঁটি’র ভিডিও প্রকাশ করলো ইরান

কয়েক বছর ধরেই অন্যদের অজান্তে বিমান ঘাঁটি তৈরির কাজ চালাচ্ছিল মধ্যপ্রাচ্যের পরমাণু শক্তিসমৃদ্ধ দেশ ইরান। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *