রেশনের চাল-গম বাজারে বিক্রির অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

পুলিশের রেশনের চাল-গম বাজারে কেনাবেচার নিয়ম না থাকলেও কিশোরগঞ্জে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে পুলিশের রেশন কেনাবেচা হয় বলে জানা গেছে। তবে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ রেশনের চাল-গম কেনাবেচার কোনও সুযোগ নেই উল্লেখ করে বলেছেন, ‘অভিযোগটি তদারকি খতিয়ে দেখা হচ্ছে’।

জানা গেছে, শুক্রবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খাদ্য গুদাম থেকে একটি ট্রাক্টরে আট মেট্রিক টন গম নিয়ে শহরের নগুয়া-বটতলা এলাকার ফিরোজ মিয়ার দোকানের সামনে গেলে স্থানীয়দের প্রশ্নের মুখে পড়েন চালক। তখন পুলিশ সুপারের নামে বরাদ্দ দেওয়া খাদ্য অধিদফতরের একটি বরাদ্দপত্র (ডিও) দেখান তিনি। এরপর পুলিশের রেশনের চাল-গম কেনাবেচার অভিযোগ ওঠে।

পরে ব্যবসায়ী ফিরোজ মিয়া সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, তিনি বড় বাজারের ব্যবসায়ী জুয়েল মিয়ার কাছ থেকে এসব গম কিনেছেন। কাগজপত্র দেখেই চাল-গম কিনে থাকেন। এটি বৈধ ব্যবসা।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বড় বাজারের ব্যবসায়ী জুয়েল। তিনি বলেন, এগুলো আপনারা এসপি সাহেবকে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন। এসব তাদেরই মালামাল। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি মোট ৫৫ মেট্রিক টন চাল-গম কিনেছেন বলে স্বীকার করেন। এর মধ্যে ৩৭ মেট্রিক টন চাল ও ১৮ মেট্রিক টন গম রয়েছে।

ট্রাক্টর চালক বলেন, গমগুলো ব্যবসায়ী জুয়েলের। সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে এসব এনেছেন তিনি। এখানে আরেক ব্যবসায়ীর কাছে নিয়ে এসেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে তারা আরও ১০ টন গম বিসিকের একটি কারখানা থেকে ট্রাক্টরে করে নিয়ে এসেছেন।

জানা গেছে, পুলিশ প্রতি মাসে চাল, গম, চিনি, ডাল, তেলসহ যেসব পণ্য পেয়ে থাকে সেগুলোতে ভর্তুকি মূল্য দেওয়া হয়। রেশনের এসব পণ্য বাজারে বিক্রি করা অবৈধ। এসব পণ্য সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্য সরাসরি গ্রহণ করেন।

স্থানীয়রা বলছেন, রেশনের চাল-গম বিক্রিযোগ্য নাহলে এগুলো ব্যবসায়ীদের হাতে গেলো কীভাবে। তারা বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার দাবি জানান।

জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, পুলিশের রেশনের চাল-গম কেনাবেচার কোনও সুযোগ নেই। এটি পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার ষড়যন্ত্র হতে পারে। তাছাড়া পুলিশ সুপারের নামে বরাদ্দপত্রের কাগজটিও সঠিক কি-না তা-ও যাচাইসহ পুরো বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, জেলায় দুই হাজার ৪৪৯ জন পুলিশের নামে প্রতি মাসে রেশন আসে। এগুলো বিতরণসহ সব কার্যক্রম অনলাইনে হয়ে থাকে। কোনও পুলিশ সদস্য রেশন না পাওয়ার অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেয়ে আমি নিজে পুলিশ লাইন্সে গিয়ে রেশনের মজুতসহ সবকিছু পরীক্ষা করে এসেছি। তবে এখানে অন্যকিছু কিংবা কোনও সিন্ডিকেট জড়িত কি না খুঁজে বের করবো আমরা। পুলিশের কেউ এসবে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

About admin

Check Also

আমি কি দুর্নীতি করেছি, আপনারা বলেন: পাপন

‘বিএনপি এখনো শুধু মিথ্যাচার করে চলেছে। আপনাদের বিবেককে প্রশ্ন করেন দেশে কি দুর্নীতি হয়েছে? ভৈরব, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *